স্তন ক্যান্সার বর্তমানে একটি পরিচিত রোগ। মধ্যবয়সি বহু নারী এই জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকের গর্ভকালে স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে। তখন জটিলতা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

গর্ভাবস্থায় স্তন ক্যান্সার ধরা পড়লে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. আরমান রেজা চৌধুরী।

গর্ভাবস্থায় স্তন ক্যান্সার ধরা পড়লে এর চিকিৎসা কিছুটা জটিল। প্রথমে আসি রোগ নির্ণয়ের ব্যাপারে। গর্ভাবস্থায় স্তনে যে স্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটে তা অনেক সময় স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক নির্ণয়ের জন্য বাধার সৃষ্টি করে।

চামড়া পুরু হয়ে যাওয়ায় বোঝা যায় না ছোট চাকা বা দলা রয়েছে কিনা। গর্ভাবস্থায় ম্যামগ্রাফি করা যাবে না; কারণ এটি মায়ের পেটে থাকা ভ্রূণের ক্ষতি করতে পারে। কাজেই আল্ট্রাসনোগ্রামই ভরসা।

এর পর কোর বায়োপসি করে নিশ্চিত করতে হবে এটি ক্যান্সার। এবার স্টেজিং বা পর্যায় নির্ধারণের পালা। স্টেজিং বা পর্যায় নির্ধারণের জন্য সিটিস্ক্যান বা এক্স-রে করা যাবে না। কারণ এটি ভ্রূণের জন্য ক্ষতিকারক। কাজেই এখানেও আল্ট্রাসনোগ্রামই ভরসা। খুব বেশি প্রয়োজন হলে কন্ট্রাস্টবিহীন এমআরআই করা যেতে পারে।

চিকিৎসা
স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে— সার্জারি বা অপারেশন, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি এবং হরমোন থেরাপি ইত্যাদি।
গর্ভাবস্থাকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায় ১ম ট্রাইমেস্টার (প্রথম ৩ মাস), ২য় ট্রাইমেস্টার (মাঝের ৩ মাস) এবং ৩য় ট্রাইমেস্টার (শেষের ৩ মাস)।

এ তিন ভাগের যে কোনোভাগেই অপারেশন করানো সম্ভব। তবে অপারেশনের ধরন নিয়ে কথা রয়েছে।

সম্প্রতি স্তন ক্যান্সারের অত্যন্ত জনপ্রিয় সার্জারি হচ্ছে ‘ব্রেস্ট কনজারভেটিভ সার্জারি’ অর্থাৎ পুরো স্তন কেটে না ফেলে শুধু টিউমার বা ক্যান্সার অংশটুকু কেটে ফেলা। সাধারণত টিউমার ছোট আকার এর হলে এ পদ্ধতিতে অপারেশন করানো হয়। কিন্তু এ পদ্ধতিতে সার্জারি করলে অবশ্যই অপারেশনের পর রেডিওথেরাপি দিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় রেডিওথেরাপি দিলে তা গর্ভে থাকা মানব ভ্রূণের জন্য ক্ষতিকারক। তাই গর্ভাবস্থায় স্তন ক্যান্সার হলে ম্যাসটেকটমি অর্থাৎ পুরো স্তন কেটে ফেলার অপারেশন নিরাপদ।

 

কলমকথা/ বিথী